তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস‍্যের কীর্তি : কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মহিলাকে সপরিবারে খুনের হুমকি

1st September 2021 11:26 pm বর্ধমান
তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস‍্যের কীর্তি : কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মহিলাকে সপরিবারে খুনের হুমকি


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :  তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের কুপ্রস্তাবে রাজি হননি মহিলা। তাই ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী, সন্তানকে খুনের হুমকি দেওয়া ও মারধোরের অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে ।চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের রায়না ১ ব্লকের পলাশন পঞ্চায়েতের ধারান গ্রামে।এই ঘটনা নিয়ে মহিলা রায়না থানায় অভিযোগ জানালেও  কোন কাজ না হওয়ায় বুধবার তিনি জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি করেছেন।ধারান গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য শেখ জাকির হোসেনের এমন কীর্তির   কথা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলার  রাজনৈতিক মহলে।  

রায়নার ধারাণ গ্রামের কামারপাড়ায় বাড়ি ওই মহিলার।লিখিত অভিযোগে এদিন তিনি পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে জানিয়েছেন, তাঁদের গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের নাম  শেখ জাকির হোসেন । গত ২৫ আগষ্ট দুপুর আড়াইটে নাগাদ পঞ্চায়েত সদস্য মহিলার ফোন নম্বারে ফোন করেন।মহিলার অভিযোগ, 
“তাঁকে ফোন করে পঞ্চায়েত সদস্য খারাপ খারাপ কথা বলে ও কুপ্রস্তাব দেয় ।সেই প্রস্তাবে তিনি রাজি হন না । এরপর  জাকির হোসেন তাঁকে বলে তিনি রায়নার বিধায়ক শম্পা ধারার কাছের লোক।তার প্রস্তাবে রাজি   হলে তিনি তাঁর ছেলের চাকরির ব্যবস্থা করেদেবেন বলেও বলেন। মহিলার অভিযোগ পঞ্চায়েত সদস্যর কোন প্রস্তাবেই তিনি রাজি  হন না।সেই কারণে পঞ্চায়েত সদস্য তাঁকে ও তাঁর স্বমী এবং ছেলেকে প্রাণে মেরেদেবে বলে হুমকি দেয়” ।  পঞ্চায়েত সদস্যের এমন হুমকির বিষয়ে  ওই দিনই মহিলা রায়না থানায় শেখ জাকির  হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের দাবি  করেছেন।মহিলা বলেন ,রায়না থানার পুলিশ  অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা তো দূরের কথা শুধুমাত্র একটা জিডি করেই দায় সারে । এমতাবস্থায় গত ৩০ আগষ্ট রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টা  নাগাদ একজনকে সঙ্গে নিয়ে জাকির হোসেন তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়।“তারা তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে মারধোর করে । এমনি জাকির হোসেন ওইদিন হুমকি দিয়ে যায় রায়না থানা থেকে অভিযোগ প্রত্যাহার না তাঁকে এবং তাঁর স্বামী ও ছেলেকে তিনি প্রাণে মেরে দেবেন“।এমন ঘটনা সবিস্তার পুলিশ সুপারকে জানিয়ে মহিলা তাঁদের গ্রামের  তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ জাকির হোশেনের  কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ।পঞ্চায়েত সদস্য শেখ জাকির হোসেন যদিও তাঁর বিরুদ্ধে মহিলার আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন ,“এমন কোন ঘটনার সঙ্গেই তিনি যুক্ত নন । ওই মহিলা ও তাঁর পরিবার বিজেপি পার্টির সক্রিয়া কর্মী ।২০১১ সালে ধারান গ্রামের এক মহিলা তৃণমূল কর্মীকে খুনের ঘটনায় ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী জড়িত । জাকির হোসেন দাবি করেন ,তাঁর এবং তৃণমূল কংগ্রেস দলের বদনাম করতে ওই মহিলা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এইসব মিথ্যা অভিযোগ আনছেন“।এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপত্র দেবু টুডু বলেন ,কেউ অন্যায় করে থাকলে  পুলিশ আইন মাফিক ব্যবস্থা নেবেন । অন্যায়কারী  যত বড়ই নেতা হন না কেন দল  তাঁর পাশে থাকবে না“ ।যদিও ধারান এলাকার  বিজেপি মণ্ডল সভাপতি সুভাষ পাত্র পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন ,“ওই মহিলা ও তাঁর পরিবারের কেউ বিজেপি পার্টি করেন না । তারা তৃণমূলেরই কর্মী। গোষ্ঠীদন্দে জড়িয়ে পড়ে ওরা নিজেরাই এখন একে অপর কে এখন খুনের হুমকি দিচ্ছে । এরপর ওরা খুনো হয়তো খুনোখুনি করবে “।  এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ )  আমিনুল ইসলাম খান জানিয়েছেন ,“মহিলা যে অভিযোগ জানিয়েছেন তার তদন্ত হবে । তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। রায়না থানার পুলিশের এক কর্তা এই বিষয়ে বলেন ,“ধারান গ্রামের ওই মহিলা কিছুদিন আগে যে অভিযোগ জানিয়ে ছিলেন তার ভিত্তিতে জিডি করা হয়েছে । তার তদন্ত চলছে । পরবর্তি সময়ে মহিলা আর কোন অভিযোগ থানায় জানান নি  ।অভিযোগ পেলে  ব্যবস্থা নেওয়া হবে “।  





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।