প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের কুপ্রস্তাবে রাজি হননি মহিলা। তাই ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী, সন্তানকে খুনের হুমকি দেওয়া ও মারধোরের অভিযোগ উঠলো তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে ।চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের রায়না ১ ব্লকের পলাশন পঞ্চায়েতের ধারান গ্রামে।এই ঘটনা নিয়ে মহিলা রায়না থানায় অভিযোগ জানালেও কোন কাজ না হওয়ায় বুধবার তিনি জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে অভিযুক্তের শাস্তির দাবি করেছেন।ধারান গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য শেখ জাকির হোসেনের এমন কীর্তির কথা জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।
রায়নার ধারাণ গ্রামের কামারপাড়ায় বাড়ি ওই মহিলার।লিখিত অভিযোগে এদিন তিনি পুলিশ সুপার ও জেলাশাসককে জানিয়েছেন, তাঁদের গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যের নাম শেখ জাকির হোসেন । গত ২৫ আগষ্ট দুপুর আড়াইটে নাগাদ পঞ্চায়েত সদস্য মহিলার ফোন নম্বারে ফোন করেন।মহিলার অভিযোগ,
“তাঁকে ফোন করে পঞ্চায়েত সদস্য খারাপ খারাপ কথা বলে ও কুপ্রস্তাব দেয় ।সেই প্রস্তাবে তিনি রাজি হন না । এরপর জাকির হোসেন তাঁকে বলে তিনি রায়নার বিধায়ক শম্পা ধারার কাছের লোক।তার প্রস্তাবে রাজি হলে তিনি তাঁর ছেলের চাকরির ব্যবস্থা করেদেবেন বলেও বলেন। মহিলার অভিযোগ পঞ্চায়েত সদস্যর কোন প্রস্তাবেই তিনি রাজি হন না।সেই কারণে পঞ্চায়েত সদস্য তাঁকে ও তাঁর স্বমী এবং ছেলেকে প্রাণে মেরেদেবে বলে হুমকি দেয়” । পঞ্চায়েত সদস্যের এমন হুমকির বিষয়ে ওই দিনই মহিলা রায়না থানায় শেখ জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের দাবি করেছেন।মহিলা বলেন ,রায়না থানার পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা তো দূরের কথা শুধুমাত্র একটা জিডি করেই দায় সারে । এমতাবস্থায় গত ৩০ আগষ্ট রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টা নাগাদ একজনকে সঙ্গে নিয়ে জাকির হোসেন তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়।“তারা তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে মারধোর করে । এমনি জাকির হোসেন ওইদিন হুমকি দিয়ে যায় রায়না থানা থেকে অভিযোগ প্রত্যাহার না তাঁকে এবং তাঁর স্বামী ও ছেলেকে তিনি প্রাণে মেরে দেবেন“।এমন ঘটনা সবিস্তার পুলিশ সুপারকে জানিয়ে মহিলা তাঁদের গ্রামের তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য শেখ জাকির হোশেনের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন ।পঞ্চায়েত সদস্য শেখ জাকির হোসেন যদিও তাঁর বিরুদ্ধে মহিলার আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন ,“এমন কোন ঘটনার সঙ্গেই তিনি যুক্ত নন । ওই মহিলা ও তাঁর পরিবার বিজেপি পার্টির সক্রিয়া কর্মী ।২০১১ সালে ধারান গ্রামের এক মহিলা তৃণমূল কর্মীকে খুনের ঘটনায় ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী জড়িত । জাকির হোসেন দাবি করেন ,তাঁর এবং তৃণমূল কংগ্রেস দলের বদনাম করতে ওই মহিলা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে এইসব মিথ্যা অভিযোগ আনছেন“।এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যের মুখপত্র দেবু টুডু বলেন ,কেউ অন্যায় করে থাকলে পুলিশ আইন মাফিক ব্যবস্থা নেবেন । অন্যায়কারী যত বড়ই নেতা হন না কেন দল তাঁর পাশে থাকবে না“ ।যদিও ধারান এলাকার বিজেপি মণ্ডল সভাপতি সুভাষ পাত্র পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন ,“ওই মহিলা ও তাঁর পরিবারের কেউ বিজেপি পার্টি করেন না । তারা তৃণমূলেরই কর্মী। গোষ্ঠীদন্দে জড়িয়ে পড়ে ওরা নিজেরাই এখন একে অপর কে এখন খুনের হুমকি দিচ্ছে । এরপর ওরা খুনো হয়তো খুনোখুনি করবে “। এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ ) আমিনুল ইসলাম খান জানিয়েছেন ,“মহিলা যে অভিযোগ জানিয়েছেন তার তদন্ত হবে । তদন্তে অভিযোগের সত্যতা মিললে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। রায়না থানার পুলিশের এক কর্তা এই বিষয়ে বলেন ,“ধারান গ্রামের ওই মহিলা কিছুদিন আগে যে অভিযোগ জানিয়ে ছিলেন তার ভিত্তিতে জিডি করা হয়েছে । তার তদন্ত চলছে । পরবর্তি সময়ে মহিলা আর কোন অভিযোগ থানায় জানান নি ।অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে “।